সরকার কর্তৃক সাম্প্রতিক ডিমের মূল্য নির্ধারণ ও ডিম আমদানিতে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পের স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহন না করে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন এর প্রতিবাদলিপি

গত ১৯ সেপ্টেম্বর-২০২৩, রোজ মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের’ (বিপিআইএ) ৫ম কার্যনির্বাহী কমিটির সভা সংগঠনের কার্য্যালয়ে শাহ হাবিবুল হক, সভাপতি বিপিআইএ এর সভাপতিত্বে কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের সকল ডিম উৎপাদনকারী খামারিদের অস্তিত্ব সরকারের নির্ধারণ করা ডিমের মূল্যের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে, অন্যদিকে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিদেশ থেকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দেশের লক্ষ খামারি সর্বশান্ত হওয়ার আতঙ্কের মধ্যে আছেন।

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রতিটি ডিমের ফার্মগেইট মূল্য ১০.৫০ টাকা, যা বর্তমানে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ থেকে অনেক কম, ছোট বড় মাঝারি সকল ডিম উৎপাদনকারী খুব কম সময়ের মধ্যে ব্যবসা থেকে অনেকেই ঝরে পড়বেন। খামার বন্ধ হলে সরকারের এ সিদ্ধান্ত দেশের চাহিদার সাথে ডিমের যোগানের মধ্যে ঘাটতি সৃষ্টি করবে। যার প্রভাবে দেশে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল হবে, খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হবে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ হ্রাস পাবে। ভোক্তা বঞ্চিত হবেন প্রতিযোগিতামুলক দামে ডিম প্রাপ্তিতে। সরকারের ডিম আমদানি কার্য্যকর হলে দেশে বার্ডফ্লুসহ অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকবে। অন্যদিকে বাংলাদেশে মুরগীর খাদ্যে এন্টিবায়োটিক ও মিট এন্ড বোন মিল (শুকরের মাংস থেকে উৎপাদিত হয়) ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। পক্ষান্তরে বাইরের দেশ থেকে ডিম আসলে উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে বলে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন মনে করে।


প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পোল্ট্রি পণ্যের মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি কার্যকরী আছে, যা পোল্ট্রি খাদ্যের দাম, বাচ্চা ও অন্যান্য উৎপাদন খরচ বিশ্লেষণ করে প্রতিমাসে পোল্ট্রি পণ্যের (ডিম মুরগী বাচ্চা) দাম স্থির করার বিধান থাকলেও তার প্রতি নূন্যতম গুরুত্ব না দিয়ে, পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজের স্টেকহোল্ডারদের মতামত না নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন (বিপিআইএ) মনে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি উৎপাদনকারী দেশ থেকে ডিম আমদানির দেশে পরিণত হবে। যেখানে সরকার পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানির জন্য ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন সেখানে ডিম আমিদানি হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।


উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ সালকে সামনে রেখে ২০৩১ সালের মধ্যে ডিম রপ্তানির লক্ষ্যে সকল সক্ষমতা ইতিমধ্যে অর্জন থেকে বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন ডিম আমদানির প্রতিবাদ জানায় এবং অবিলম্বে ডিম আমদানির অনুমতি বাতিলের আহবান জানাই।
পাশাপাশিভাবে খামারিদের উৎপাদন খরচ বিবেচনায় ডিমের যোক্তিক দাম পূণরায় নির্ধারণে আহবান জানাই।

 

?>